ই-পেপার শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

কান নিয়েছে চিলে

বিপ্লব বড়ুয়া:
০১ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:২৬

বাংলাদেশের সমাজসত্তার সামগ্রিক বিবর্তন ও বাঙালি চেতনার কাব্যিক রূপকার কবি শামসুর রহমানের কবিতার কয়েকটি চরণ এ মুহুর্তে আমার বেশ মনে পড়ছে-

এই নিয়েছে ঐ নিল যাঃ! কান নিয়েছে চিলে,

চিলের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে।

কানের খোঁজে ছুটছি মাঠে, কাটছে সাঁতারবিলে,

আকাশ থেকে চিলটাকে আজ ফেলব পেড়ে ঢিলে।

গত ৮ ও ৯ মার্চ একশত সাইত্রিশ বছরের প্রাচীন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে সংগঠিত সামান্য অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রধরে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দুটি বিবদমান গ্রুপের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা এবং ঘটনা থেকে রটনার কীর্তিকলাপ, মারমার, কাটকাট অবস্থা দেখে আমার কাছে কবির সেই চরণের অংশবিশেষের মর্মার্থকে যথার্থ মনে হয়েছে। সেদিন কেন এরকম হলো ? এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। ভাবছি আমরা সত্যিকারের মানুষ হতে পেরেছি কিনা কবি সত্যন্দ্রনাথ দত্তের কবিতা-

‘জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে

সে জাতির নাম মানুষ জাতি;

এক পৃথিবীর স্তন্যে লালিত

একই রবি শশী মোদের সাথী।

মানুষ জাতি হিসেবে মানুষের মধ্যে যে সম্মান মর্যাদা থাকার কথা তা আদৌ কী রক্ষা করতে পারছি ? জ্ঞান-বিজ্ঞানে আমরা দিন দিন যতই উন্নত হচ্ছি আবার অপর একটি অংশ বেসামালভাবে উগ্র ধর্মান্ধতার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সঠিক জ্ঞানের অভাবে মানুষ মানুষের কাছে সঠিকভাবে মূল্যায়িত হচ্ছে না। সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থায় অবক্ষয়ের মাত্রা যদি ক্রমশঃ বাড়তে থাকে তাহলে মানুষ হিসেবে পরিচয় দেয়া কতটুকু সমীচীন এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে। সত্যর চেয়ে মিথ্যার জোয়ারে এক শ্রেণির মানুষ ভেসে যাচ্ছে। প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে মানুষ সহসা ফায়দা লুঠতে মরিয়া হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে সেরকম নজির আমাদের হাতে আছে কক্সবাজারের রামু ট্রাজেডি, ব্রাম্মনবাড়িয়ার নাসির নগর ট্রাজেডি, কুমিল্লায় দুর্গা উৎসব চলাকালিন ট্রাজেডি, নোয়াখালির ট্রাজেডির কথা আমরা বলতে পারি। মিথ্যার ডালপালা ছড়িয়ে এক মুহুর্তে কিছু মানুষ যে নোংরাা খেলায় মেতে উঠতে পারে তার সর্বশেষ অরাজক কার্যকলাপ আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। ফিরে আসি সেদিনের ঘটনায়- দুটি পক্ষকে বেশ সোচ্চার হতে দেখেছি। একটি পক্ষ হচ্ছে শতাব্দী প্রাচীন বাঙালি বৌদ্ধদের শেকড়ের সংগঠন বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি এবং তার অঙ্গ সংগঠন অন্য পক্ষটি হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু। এই দুটি পক্ষের মধ্যে কেন ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন।

যেভাবে সুচনা ১০/০৪/ ২০১২ সালে চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের পুজনীয় অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একুশে পদকে ভূষিত, বাংলাদেশী বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু মহামান্য সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাথের, বিহার পরিচালনা কমিটির যৌথ সিদ্ধান্তক্রমে ড. জিনবোধি ভিক্ষুকে বিহারের উপাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ করা হয়। ৭ ও ৮ জুলাই ২০১২ ইংরেজি তারিখে সেই বিজ্ঞপ্তিটি স্থানীয় দৈনিক আজাদী, পুর্বকোণ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। অপসারণ বিজ্ঞপ্তির আলোকে ড. জিনবোধি ভিক্ষু ১০/০৫/২০১২ সালে অপসারণ আদেশের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বিজ্ঞ জজ আদালতে তিনি একটি মামলা দায়ের করেন । মামলা নং- ৬২/১২। দীর্ঘ ২ বছর ২ দিন পর অর্থাৎ ১২-০৫-২০১৪ তারিখ জিনবোধির করা মামলাটি আদালত তাঁর আবেদন না মঞ্জুর করে রায় প্রদান করেন। কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ৯৯৫৭/২০১৬ সালে রিট আবেদন করলে ২৯/০৫/২০১৭ সালে আগের দেয়া রায়টি বহাল রাখেন। ২৮/০২/ ২০২১ এবং ১৭/০৭/২০২৩ সালে দুইবার বিজ্ঞ আপীল আদালত তাহা খারিজ করে দেন। এরপর জিনবোধি ভিক্ষু পুনরায় আপিল করেছেন বলে জানা যায়। এভাবে মামলাটি চলতে চলতে আজ এ পর্যন্ত এসে ঠেকেছে । দীর্ঘ ১৩ বছরেও এই মামলার নিস্পত্তি হয়নি। এর মধ্যে তিনি বৌদ্ধ সমিতির বিরুদ্ধে আরো বেশ কটি মামলা করেন যার সংখ্যা আনুমানিক ১০ টি বলে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন। এই এতগুলো মামলা এখনো চলমান আছে এবং দুই পক্ষের জন্য বড় একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ মামলার পিছনে অর্থ ও সময় ব্যয় করতে গিয়ে ইতিমধ্যে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে উভয় পক্ষকে। আর সেদিনের সর্বশেষ ঘটনা পুরো বৌদ্ধ সমাজকে ছাড়িয়ে সর্বজনীন সমাজে “ টপ অব দ্যা বড়ুয়া নিউজ”-এ পরিণত হয়েছে। বৌদ্ধ সমাজে এখনো সে রেশের হরদম কানাঘুষা চলছে।

এ ঘটনায় শুধুমাত্র কী এক পক্ষের দোষ ? না উভয় পক্ষের দোষ। সমাজের নীতিনির্ধারনী মহলে এনিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। আমি কোনো পক্ষকে বড় করে দেখা বা দোষী সাব্যস্ত করা আমার লেখার প্রধান উপজীব্য নয়। এই চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহার ব্যাক্তি জিনবোধি কিংবা সংগঠন বৌদ্ধ সমিতি যেই পরিচালনা করুক সে নিয়ে আমার কোনো রকম মাথাব্যাথাও নেই। কারণ যে পক্ষই বিহার পরিচালনার দায়িত্বে থাক সেখানে প্রার্থনা করবে তো নিজ সম্প্রদায়ের মানুষরা। আমার বিষয়বস্তু হচ্ছে অন্যখানে ড. জিনবোধি ভিক্ষু ও বৌদ্ধ সমিতি কেন তর্কে জড়ালো এবং তর্ক থেকে একজন মহিলার শাড়ি টানাটানি হলো, শাড়ি টানার দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে ঐ নারীর স্বামী ভিক্ষুর মুখে কেন আঘাত করলো। এখানে দুটি বিষয় বেশ গুরুত্বপূর্ণ, একটি হচ্ছে ভিক্ষুকে আঘাত করা সাধারণ মানুষরা যেমন অন্যায় হয়েছে বলছে, আবার অপর দিকে ভিক্ষু কর্তৃক একজন নারীর শাড়ির টেনে হেঁচড়ে খুলে ফেলার দৃশ্যকে অন্যায় এবং অনৈতিক হিসেবে গন্য করছে। পুলিশ ও জনসম্মুখে ঘটনাটি ঘটেছে। জিনবোধি ভিক্ষুকে জুতা দিয়ে মারার যে সংবাদটি রটানো হয়েছে তা ছিল মিথ্যা। এটি জুতা ছিল না, এটি ঐ নারীর হাতের পার্স। স্ত্রীকে শাড়ি টানা থেকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর স্বামী পার্স দিয়ে আত্মরক্ষার প্রচেষ্টা চালায়। যদিও বা দীর্ঘ সময় বিরোধ হলেও পর এখানে সবাই সবার অত্যন্ত সুপরিচিত ও ঘনিষ্টজন। এরকম একটি অপ্রীতিকর ঘটনা কারো কাম্য ছিলনা। আমি নিজেও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৌদ্ধ সমাজের মান খুন্ন হয়েছে বলে মনে করছি। আমরা যদি একটু সুক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে দেখি ঘটনাটিকে সেদিন তাৎক্ষনিকভাবে কী মিটিয়ে ফেলা যেতো না ? উভয় পক্ষ থেকে সেরকম কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি যেহেতু একটি বৃহৎ জাতিয় সংগঠন তারা নিজ থেকে এগিয়ে এসে যদি একটি বিবৃতিও দিতেন তাহলেও ঘটনার এত বেশি বিস্তার লাভ করতো না। সে দায় বৌদ্ধ সমিতির উপরও কমবেশি বর্তায়। ভিক্ষু সংঘের কাছ থেকেও সংযম প্রদর্শন করতে দেখা যায়নি। রাগ-ক্রোধ মানুষকে যে কী রকম ভয়াবহ হিংস্র করে তোলে তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ পুরো বৌদ্ধ সমাজ পরপর দুই দিন প্রত্যক্ষ করেছে। যা বৌদ্ধ সমাজ একটি বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এই ঘটনা উঠতি প্রজন্মের সন্তানদের আগামী বহুবছর পর্যন্ত ভোগাবে।

সোশ্যাল মিডিয়া একদিকে যেমন উপকার করে আবার অন্যদিকে ক্ষতিও করে। উভয় পক্ষের মধ্যে এই উন্মাদনা চলে ৮ তারিখ সারাদিন। পুলিশ ঐদিন পড়ন্ত বিকেলে সবাইকে যখন বিহারের আাঙ্গিনা থেকে বের করে দেয় তখন মনে করেছিলাম সবকিছু গুছে যাবে, মিঠে যাবে। তথ্যসুত্রে জানতে পারি ৮ তারিখ রাতে পুলিশ উভয় পক্ষকে ডেকে শান্তিশৃঙ্খলা বজার রাখার স্বার্থে পুলিশ দলগতভাবে বিহারে প্রবেশাধিকার নিষেধ করে। কিন্তু, পরের দিন দুপুরে জিনবোধি ভিক্ষুর কিছু তরুন ভিক্ষু ও গৃহী অনুসারী পুলিশের নেকনজরকে ফাঁকি দিয়ে অতর্কিত বিহারে প্রবেশ করে যেভাবে আসবাব পত্র ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন দিয়ে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। এটা সত্য যে, এই বিষয়টিকে অনেকে ভালো চোখে গ্রহণ করেনি। কেন এরা এইরকম করলো ? আমি এটা স্বীকার করি যে বৌদ্ধ সমাজের একটি অংশকে সংগঠিত করে মানবসেবা ও সমাজসেবায় ব্রত করার যেরকম অবদান দীর্ঘ বছর ধরে যেমন বৌদ্ধ সমিতি ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো রেখে আসছিল, তেমন ড. জিনবোধি ভিক্ষুও সমাজ, ধর্ম ও শিক্ষা চেতনায় নিরলসভাবে কাজ করেছেন এবং এবং উভয়ে এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবং সেই সাথে সম্প্রতি তিনি একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। যা বৌদ্ধ সমাজের জন্য পরম পাওয়া বলে মনেকরি। সমাজ-সম্প্রদায়কে পরিবর্তনের ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কমবেশি সবার অবদান স্বীকার করতেই হয়। এখানে কোনো পক্ষের বা কারো অবদানকে ছোটো করে দেখার অবকাশ নেই।

প্রিয় পাঠক, আপনারা আমার মতের সাথে আপনাদের মতের মিল নাও হতে পারে? পুলিশের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ড. জিনবোধি ভিক্ষুর অনুসারীরা বিনা বাধায় ৯ তারিখ যেভাবেই হোক বিহারে গেলেন তাতে কারো কোনো রকম আপত্তি নেই, থাকার কথাও নয়? কিন্তু ঐদিন ভাঙচুর, উগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা যদি না ঘটাতো আপনাদের ওপর কারো আঙ্গুল তোলার প্রশ্নই আসতো না। অতি উৎসাহিরা যে ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটালো তা সেদিন অন্যধর্মের হাজার হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। একবার ভাবুন তো এগুলো কাদের সম্পদ ? বৌদ্ধ সমিতির নেতৃবৃন্দরা তো আমাদের সমাজের মানুষ, কারো না কারো আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব। সমাজের নেতৃস্থানীয় প্রবীন ব্যক্তিত্বদ্বয়। এদের ওপর কিছু মহিলা জুতা ছুড়ে মারার দৃশ্য লক্ষ্য করেছি। কেন এরকম করলেন? এই ঘটনার পর থেকে ভাইয়ে-ভাইয়ে, ভাইয়ে-বোনে, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-মা বাবা, আত্মীয়-আত্মীয়ের মধ্যে অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে, ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন মারমুখি চেহারাগুলো দেখছিলাম লজ্জায় মাথা নীচু হয়েগেছে। সবার মধ্যে যেন একধরণের বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নবোধকে আটকে পড়েছে। এ পর্যন্ত আমি যত জনের সাথে কথা বলে অনুধাবন করেছি ঘটনার পর থেকে এখন কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেনা। শুধু মনে হচ্ছে এই কী বিভৎসতা দেখলাম। আজ এতদিন পরেও কারো সাথে কেউ ভালো করে মন খুলে কথা বলছে না। তাহলে দেখুন, এই যে ফাটল দেখা দিলো তা দিয়ে কী লাভ হলো, কার লাভ হলো, জিনবোধি ভিক্ষুর, সমিতির না বৌদ্ধ সমাজের ? বৌদ্ধ ভিক্ষুদে শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ সংগঠন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা এবং সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা সংকট নিরসনে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখিনি। উল্টো ঘটনার ৬ দিন পর ১৫ মার্চ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা একপক্ষীয় একটি সিদ্ধান্ত ছাপিয়ে দিয়ে সমাজকে আরোবেশি শত্রুমুখি করে দেন। মহাসভা চাইলে উভয় পক্ষকে একসাথে ডেকে একটি সুষ্টু শান্তিপূর্ণ সমাধান দিতে পারতেন। বৌদ্ধ সমাজ এ জন্য অপেক্ষায় ছিল, কিন্তু তাদের দায়সারা গোছের সিদ্ধান্ত সমাজকে দ্বিধা বিভক্তির দিকে নিয়ে গেছে বলে সমাজ সচেতন ব্যক্তিবর্গরা অনুধাবন করেছেন। মনে রাখতে হবে সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হলে উভয় পক্ষকে ছাড়ের মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হয় কিন্তু এখানে দূর্ভাগ্য হলেও সত্য যে এই সিদ্ধান্তে সেরকম কিছু চোখে পড়েনি। এখনো কোনো পক্ষই শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে এগিয়ে আসছেনা এবং তৃতীয় কোনো পক্ষকেও সংকট নিরসনে উদ্যেগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। উল্টো একের পর এক মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ছে। তাহলে বৌদ্ধ সমাজ কী এভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে ? ৩০ মার্চ চট্টগ্রামে চারুআড্ডা সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের আলোকে নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে আমি মনেকরি এটি ছিল একটি আশার প্রদীপ। সংলাপে প্রত্যেক আলোচকই সমাধানের তাগিদ অনুধাবন করেছেন। এ জন্য আমি চারুআড্ডার উদ্যোক্তা পরিচালক চারুউত্তম বড়ুয়া, সমাজের উজ্জল আইকন সিদ্ধার্থ বড়ুয়া এফসিএ ও মনিরাজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রিয়রঞ্জন বড়ুয়া’কে সাধুবাদ জানাই। তারা এই আয়োজনটি করেছেন বলে অনেকে মনের অব্যক্ত কথাগুলো বলার সাহস পেয়েছেন। আরেকটি বলতে চাই, বিষয়টি যেহেতু দীর্ঘ বছর ধরে মামলায় গড়িয়েছে আইনের প্রতি কি শ্রদ্ধা প্রদর্শিত হয়েছে ? কারণ বল যেহেতু এখনে কোর্টের আওতাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহন-প্রদানের ক্ষেত্রে আইন উপেক্ষিত হয়েছে।

বিবেকের কাছে একবার প্রশ্ন করুন ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা যেভাবে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিলেন এবং তৎপরবর্তি যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করেছিল, মিছিল-মানবন্ধন করেছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় অধিকাংশ ফেইক আইডি থেকে অশালীন ভাষায় গালাগাল ও সামাজিক ব্যক্তিত্বদের ছবিতে জুতার মালা, ঝাড়ু ও লাথি মেরে সম্প্রদায়ের সুনাম করেছে তারা কী বিধর্মী, ভিন্ন দেশের, ভিন্ন ভাষাভাষি মানুষ? নাকি তারা আপনার আমার নিকট আত্মীয় স্বজন। যে ক্ষত সৃষ্টি হলো, সম্প্রদায়ের অপুরণীয় সম্মান খুন্ন হলো, এটির ক্ষত আগামী কত বছর পর্যন্ত বয়ে বেড়াবে আপনারা জানেন? এর মধ্যে দিয়ে সমাজের নানান অংশে ক্রমশ ভাঙন সৃষ্টি হবে। এর দায়ভার কে নেবে একবার ভাবুন তো? বৌদ্ধ সমাজ যে অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী, করুণার কথা বলা হয় তার কী কোনো রকম অস্তিত্ব-নিশানা দেখতে পেয়েছেন কী ?

সর্বশেষে বলতে চাই, সমাজের সংগঠন গুলোর নীতি নির্ধারনীতে বড় রকম সাংগঠনিক মেধা-মননশীলতার যেমন ঘাটতি রয়েছে, তেমনি ধর্মান্ধ উগ্রতা এবং ধর্মীয় অপসংস্কৃতি আমাদের মধ্যে গেড়ে বসেছে। এর থেকে পরিত্রান পেতে হলে সংঘ সমাজ ও গৃহী সমাজ সাম্য মৈত্রী ঐক্যতার নিরিখে উভয়ের মধ্যে নবতর নীতিধারা সংযোজন-সংযুক্ত করতে হবে। ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে এর থেকে উত্তরণ কঠিন হয়ে পড়বে। এব্যাপারে উভয় পক্ষ বিবাদ-বৈষম্য ভুলে মৈত্রী পোষণ পূর্বক এর একটি সুষ্টু, শান্তিপূর্ণ সমাধান বৌদ্ধ জাতি-সম্প্রদায় আশা পোষণ করেন। সম্প্রদায়কে আপনার নিরাশ করবেন না। শুভ প্রত্যয়ের প্রত্যাশা।

লেখক : সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক।

আমার বার্তা/জেএইচ

ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের অন্তরায়

ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্রলাভের অধিকার প্রত্যাখ্যান করে  ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোটের

নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকার

কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে হয়, “বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বনাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে ছাত্র আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে অধিকার

যুদ্ধ আক্রান্ত বৈশ্বিক সংকট ও ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন

মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো সম্প্রতি ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ন্যাটোর ৭৫তম বার্ষিক
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বসুন্ধরা থেকে শিবিরের ১৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

চ্যাটজিপিটিতে এলো সার্চ ফিচার

ছিন্নমূল ২ হাজার মানুষকে রেড ক্রিসেন্টের ত্রাণ সহায়তা

র‍্যাবের অভিযানে সারাদেশে আরও ২৯০ জন গ্রেপ্তার

নাহিদসহ ৩ সমন্বয়ক হাসপাতাল থেকে ডিবি হেফাজতে

সেন্টমার্টিনগামী ট্রলার ও স্পিডবোট ডুবিতে নিখোঁজ তিনজনের লাশ উদ্ধার

চীন-রাশিয়ার ৪ যুদ্ধবিমানকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ধাওয়া

ঘুম থেকে উঠে শুনি আমি মারা গেছি

দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী

নতুন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি ড. ইউনূসের

এক দফা দাবিতে ‘জাতীয় ঐক্যে’র ডাক বিএনপির

আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী

বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন ছিল সাগরের, ফিরলেন লাশ হয়ে

দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করতেই দেশকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

সাংবাদিক সাঈদ খানকে গ্রেপ্তারে বিএফইউজে ও ডিইউজের নিন্দা

ঢাকাসহ চার জেলায় আজ ৯ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল

সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন আজ

নদীর বুকে প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধন

পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে কারফিউ তুলে নেওয়া হবে

২৭ জুলাই ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা