মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় পরকিয়া ও অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও এক প্রবাসীর স্ত্রীকে সারারাত গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখলেন এলাকাবাসী। আটক হওয়া বিএনপি নেতার নাম মো. সিরাজুল ইসলাম মুনজেল (৪৫)। তিনি দৌলতপুর উপজেলার ধামশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক।
শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এআরএম আল-মামুন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে দৌলতপুর উপজেলার ধামশ্বর এলাকার চর দেশগ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার বেশ কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার পর সামাজিকভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে বলে জানেয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার চর দেশগ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে সিরাজুল ইসলাম মনজেলের অবৈধ সম্পর্ক ছিলো। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চাঞ্চল্য ও কানাঘোষা চলছিল। গতরাতে মুনজেলকে গ্রামের কয়েকজন লোক ঐ এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করতে দেখেন। তার কিছুক্ষণ পরে স্থানীয়রা তাকে হাতে-নাতে আটক করে এবং শনিবার ভোররাত পর্যন্ত ঐ নারীকে সহ গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম মুনজেল উপজেলার ধামশ্বর ইউনিয়নের গালা এলাকার মৃত শিরজন আলীর ছেলে। তিনি ধামশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক। প্রবাসীর স্ত্রী দুই সন্তানের জননী ও সিরাজুল ইসলাম মুনজেল ২ সন্তানের জনক।
ধামশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান পিন্টু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাত দুইটার দিকে এলাকাবাসী তাদের আটক করে গাছে বেঁধে রাখেন। তারা দুজনেই অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন। ওই নারীর প্রবাসী স্বামী এখন তাকে নিয়ে সংসার করবে না বলে জানিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত দুজনেই দুজনকে বিয়ে করতে রাজি আছেন। এখন সামাজিকভাবে বিষয়টা মীমাংসার চেষ্টা চলছে। দলীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ধামশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস বলেন, এই ঘটনায় দুই পক্ষের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসেছি। প্রবাসী ব্যক্তি তার স্ত্রীকে নিয়ে আর সংসার করতে চায় না বলে ফোনে কল করে জানিয়েছেন। এ ঘটনার পরে প্রবাসীর স্ত্রী ও মো. সিরাজুল ইসলাম মনজেল বিয়ে করতে রাজি। তাদের পরিবারের সদস্যরাও এ বিষয়ে রাজি হয়েছেন। সে কারনে তাদের কোন অভিযোগ নাই। সিরাজুল ইসলাম মুনজেল ধামশ্বর ইউনিয়নের বিএনপির দপ্তর সম্পাদক বলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন।
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এআরএম আল-মামুন বলেন, এই বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমাণ্যরা এই বিষয়ে মিমাংসা করার চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় কোন অভিযোগ করেননি কেউ। তবে কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।