মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে আট বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণের শিকার হয়ে টানা ৭ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে সকল কে কাঁদিয়ে চলে গেল না ফেরার দেশে। এখবর শোনার পরপরই মাগুরা তে মিছিল করে ছাত্র জনতা।
গত ০৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে শিশু আছিয়াকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে,অবস্থা খারাপ হওয়ার তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে অবস্হার উন্নতি না হওয়ায়, ফরিদপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই সজীব শেখ ও তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ কে আটক করেছে পুলিশ।
সূত্রমতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এখনো সে অচেতন অবস্থায় আছে। তাকে শিশুদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হবে। পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা হাসপাতালে আনা হয়। সেখান থেকে দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানান, তাদের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায়। শিশুটি কয়েকদিন আগে তার বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে আসলে বোনের শ্বাশুড়ী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। অভিযুক্ত হিটুর স্ত্রী ও সজীব এর মা জাহেরা বেগম বলেন, আমি মাঠে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি শিশুটি পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি সবাইকে খবর দিয়ে তাকে জরুরি ভিত্তিতে মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করি। পরে তার অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হলে প্রথমে ফরিদপুর ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি। আমার স্বামী খুবই খারাপ প্রকৃতির একজন মানুষ। সে আমার সঙ্গেও সব সময় দুর্ব্যবহার করে। তার সঙ্গে আমি কোনো ভাবেই পারছি না। যেকোনো বিষয়ে প্রতিবাদ করলে আমার ওপর নেমে আসে নানা ধরনের নির্যাতন।
মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করে দেখা গেছে শিশুটির গলায় একটা দাগ আছে। মনে হচ্ছে, ধর্ষনের পর হত্যা করার উদ্দেশ্যে কিছু দিয়ে চেপে ধরা হয়েছিল। শরীরের বেশ কিছু জায়গায় আঁচড় আছে। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, শিশুটির সঙ্গে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিশুটি অচেতন অবস্থায় ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, যে বাসায় সে বেড়াতে এসেছিল সেখানেই ঘটনাটি ঘটেছে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তার দুলাভাই সজীব শেখ (১৮) ও দুলাভাইয়ের বাবাকে হিটু শেখ(৫০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
সেই ধর্ষিত আছিয়া মাগুরা মানুষ কে ঋণী করে টানা সাত দিন হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে সারা বিশ্বকে কাদিয়ে মৃত্যুর কাছে হার মেনে আজ পৃথিবীর থেকে চির বিদায় নিল। আছিয়ার মৃত্যুর খবরে মাগুরায় ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে ছাত্র জনতা মিছিল বের করে।