অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পাবনার বেড়া মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এ মামলা হয়।
সাঁথিয়া উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের সেলিম হোসেন মানিক মামলাটি করেন। আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়াও তিনজন সাংবাদিক রয়েছেন।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওলিউর রহমান জানান, গত শনিবার মামলাটি রেকর্ড হয়। তবে রোববার রাতে এর কথা জানাজানি হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে বেড়া পৌর এলাকার কাগমাইরপাড়ায় আবু সাইয়িদের নিজ বাড়িতে একটি সমাবেশ হয়। আবু সাইয়িদের নেতৃত্বে সমাবেশে আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। ওই সমাবেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন এলাকার সদস্য ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করেন। সেখানে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, বন্দুকসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বর্তমান সরকারকে উৎখাতের জন্য দেশবিরোধী স্লোগান দেন।
১৬৪ জন আসামির মধ্যে আবু সাইয়িদকে এক নম্বর ও সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মিরাজুল ইসলামকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ফজলুর রহমান মাসুদ, বেড়া পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম, বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আবু সাঈদ, সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল রানা খোকন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল খান সানা, বেড়ার করমজা ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন আলী বাগচী, চাকলা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী, ব্যবসায়ী মতিউর রহমান।
তিনজন সাংবাদিককেও মামলার আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন পাবনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ও দৈনিক সংবাদের স্টাফ রিপোর্টার হাবিবুর রহমান স্বপন, সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মানিক মিয়া রানা ও সদস্য আবু শামা।
বেড়া মডেল থানার ওসি অলিউর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার আসামি সাংবাদিক হাবিবুর রহমান স্বপন বলেন, আমাকে মামলায় ১১২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নই। অধ্যাপক আবু সাইয়িদের বৈঠকে আমি উপস্থিত ছিলাম না। এর সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই।
এদিকে মামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, সাজানো গল্পের এই মামলা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। আমি আমার নেতাকর্মীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছি। সেখানে গোপন কোনো বৈঠক হয়নি।