‘নতুন বছর, নতুন বাংলাদেশ’ থিমে এবারের বাংলা নববর্ষ উদযাপনে রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শো। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সর্ববৃহৎ ড্রোন শো প্রদর্শিত হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এ ড্রোন শো আয়োজন করা হয়।
এদিন ঢাকার আকাশে দেখা গেল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো ‘আবু সাঈদ’, ‘পানির বোতল হাতে প্রতীকী মুগ্ধ’, ‘২৪-এর বীর’, ‘পায়রার খাঁচা ভাঙা থিম’ এবং ‘ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনার’ ছবি।
তবে ড্রোন শোতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের ছবি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ছাত্রদল। বিষয়টিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সোমবার রাত ১১টা ২ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এ দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, ‘এই কয় সপ্তাহের ঝড়ের পর ক্লান্ত শরীরে ঘরে ঢুকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভাই-বোনদের বিবৃতিটা চোখে পড়লো। হয়তো আমি তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে পারতাম। কিন্তু পাবলিক রেকর্ডসের জন্য এখানেই লিখছি।’
‘আজকের ড্রোন শোতে শহিদ ওয়াসিমের ছবি না থাকায় তাদের ব্যথিত হওয়া শতভাগ যৌক্তিক। এই দুঃখ আমারও। যাত্রাবাড়ীর কোনো মাদ্রাসাছাত্রের ছবি না রাখতে পারার দুঃখও আছে। আরও অনেককে মিস করেছি আমি নিজেও। কিন্তু আইকনিক ইমেজ বাছাই, স্টোরিটেলিংয়ের থিমেটিক ফ্লো ঠিক রাখা এবং বেশি ইমেজ বাছাই করার সুযোগ না থাকাতে এই অবস্থায় পড়েছি আমরা।’
তিনি লেখেন, ‘মনে রাখবেন প্লিজ, আমি শহিদদের দলের ভিত্তিতে ভাগ করে গুরুত্ব বা কম গুরুত্ব দিয়েছি তা না। জুলাইয়ের সব শহিদই সমান। শুধু জুলাই না, এর আগের ১৬ বছরে গুম-খুনের শিকার সবার ত্যাগেই ফ্যাসিবাদের পতন। তারা প্রত্যেকেই আমাদের হিরো। আমার জুলাই-আগস্ট বা ২০১৪-১৫ সালের লেখালেখি পড়ার সুযোগ হলে দেখতে পাবেন আমি কী কী বলার চেষ্টা করেছি।’
সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরও লেখেন, ‘আমি শুধু এইটুকু বলবো, আপনারা দয়া করে জুলাই জাদুঘরের দিকে দৃষ্টি রাখবেন। সেখানে আমাদের কালের নির্যাতিত, শহিদ, গুম হয়ে যাওয়া সবাইকে পাবেন, সবার গল্পগুলা পাবেন। যে মানুষদের প্রাণের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা, তাদের আমাদের স্মরণ করতে হবে, তাদের জন্য বেদনায় মন খারাপ হয়ে যেতে হবে। কারণ বেদনা আমাদের মন এবং ইতিহাস দুইটাই পরিশুদ্ধ করে। বেদনা জারি থাকা তাই ভালো। সব শহিদ ও গুম হওয়া মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা।’
আমার বার্তা/জেএইচ