২০২০-২১ সালে ‘মুজিব বর্ষে’র আয়োজন হিসেবে নানা ফেডারেশন নানা ধরনের অনুষ্ঠান করেছে। বিসিবিও ব্যতিক্রম ছিল না। এখানেও অনুষ্ঠান হয়েছে। তবে আয়োজনের নামে বিপুল অর্থ লোপাট হয়েছে এখানে, অভিযোগ দুদকের।
আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বিসিবিতে এসে হাজির হন দুদকের কর্মকর্তারা। প্রায় ১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে তাদের অভিযান। কী অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান, তা দুই সহকারী পরিচালক আল আমিন ও মাহমুদুল হাসান পরিষ্কার করেন অভিযান শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে।
তখনই উঠে আসে মুজিব শতবর্ষে হয়ে যাওয়া এ জালিয়াতির খবর। সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান জানান, প্রাথমিকভাবে ১৯ কোটি টাকা সরানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলেও আভাস দেন তিনি।
তার কথা, ‘মুজিব ১০০ প্রোগ্রামে যে ব্যয় দেখানো হয়েছে, তাতে একটা অ্যানোমলি আছে। কনসার্টসহ যে আয়োজনটা হয়েছিল, সেখানে ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। সেখানে আসলে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকা। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়নি, না দেখিয়ে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টের কাছে আমরা ডকুমেন্টগুলো চেয়েছি। টিকিট বিক্রি বাবদ দুই কোটি টাকা আয় হয়েছে, এই দুই কোটি টাকাও আয়ে দেখানো হয়নি। আত্মসাতের ইস্যুটা যেটা, সেখানে অঙ্কটা আরও বাড়তে পারে। বরাদ্দ ছিল ১৫ কোটি, খরচ দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি, আর খরচ আসলে হয়েছে মোটে ৭ কোটি।’
শুধু মুজিব শতবর্ষে নয়, আরও অনেক খাতে জালিয়াতির আলামত খুঁজছে দুদক। এছাড়াও বিপিএলের টিকিট বিক্রির বিষয়টিও সে আওতায় পড়ে। দুদক সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, ‘আরেকটা বিষয় আমরা দেখেছি টিকিট সেলিংয়ের ব্যাপারে। আমরা দেখেছি যে তৃতীয় আসর থেকে দশম আসর পর্যন্ত ৮ আসরে আয় দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। সেখানে গেল বার এক আসরেই আয় হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। এবার যখন বিসিবি বলল যে আমরা নিজেরাই টিকিট বিক্রি করব, তখন আয়টা বেড়ে দাঁড়াল ১৩ কোটি টাকা। ৮ বছরে ১৫ কোটি আর এক বছরে ১৩ কোটি, কীভাবে এত বড় অ্যানোমলি হয়, সেটা আমরা রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করছি, তা পর্যালোচনা করে দেখব আমরা।’
এছাড়াও তৃতীয় বিভাগের দল নির্বাচনের ক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ আছে। সে বিষয়ে সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, ‘২০২৩ সালসহ বিগত বছরগুলোয় কীভাবে দল নির্বাচন হয়েছে, তা এখানে এসে আমরা দেখেছি। আগে দল বাছাইপর্বে খেলানোর জন্য ফি ছিল ৫ লাখ টাকা। তখন ২ কিংবা ৩টা দল খেলত টুর্নামেন্টে। তা থেকেই তারা বাছাই করল দুই বা একটা দল। এ বছর ফি ১ লাখ টাকা করে দেওয়ার পর ৬০টা ক্লাব আবেদন করল। আমরা ডকুমেন্টস কালেক্ট করেছি, কেন আগে বেশি দল নাম লেখাতে পারেনি, এখানে ব্যক্তিগত কোনো প্রভাব ছিল কি না, বোর্ডের কোনো প্রভাব ছিল কি না, এই তৃতীয় বিভাগ বাছাইপর্বে, কিছু ক্রাইটেরিয়াও ছিল যা পাড়া মহল্লার দলগুলোর মিট আপ করা সম্ভবও ছিল না। এটা আমরা যাচাই বাছাই করে দেখব।’
আমার বার্তা/এমই