
বহিষ্কারাদেশ বহাল রেখেই সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফকে সাতক্ষীরা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আওতাধীন ১৪টি ইউনিয়ন শাখার ৩৩ জন সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক যৌথভাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে মনোনয়ন পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েছেন। গত ৬ নভেম্বর তারা এ আবেদন করেন।
আবেদনপত্রে বলা হয়, মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী মো. আব্দুর রউফ অতীতে একাধিকবার দল পরিবর্তন করেছেন। ২০০৯ সালে বিএনপি থেকে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে পরে আবার বিএনপিতে ফেরেন।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ২০২৪ সালের ২৫ এপ্রিল কেন্দ্রীয় বিএনপি তাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করে। সেই বহিষ্কারাদেশ আজও প্রত্যাহার হয়নি। এছাড়া, গত ২৩ এপ্রিল এক মাহফিলে জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা কবির বিন সামাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে তিনি আলোচনায় আসেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় আলেম–ওলামারা মানববন্ধন করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
আবেদনে আরও বলা হয়, জেলা বিএনপি তখন স্পষ্টভাবে জানায়, আব্দুর রউফ বিএনপির কোনো নেতা বা কর্মী নন। তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, এজন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ ও সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু।
আবেদনে তৃণমূল নেতারা আরও অভিযোগ করেন, সাতক্ষীরা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন ও সরকারি খাস জমি দখলের ঘটনায় গত বছর জেলা প্রশাসক তাকে প্রকাশ্যে ‘বাটপার’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এতে সাধারণ মানুষ খুশি হয়। এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তি চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলে দলের ভাবমূর্তি ও ঐক্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
আবেদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের কাছেও।
এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ৩ নভেম্বর দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরপরই সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন রাত ১০টার পর খুলনা–সাতক্ষীরা মহাসড়কের বিনেরপোতা বাইপাস মোড়ে আব্দুর রউফের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়। ওই সময় তার আরেক ভাই জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হবি ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন দখলে নেন।
জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে পারে।
আমার বার্তা/জেএইচ

