
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ৬ নং সোনাহার মল্লিকাদহ ইউনিয়নে ১৪ বছর বয়সী বাকপ্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এলাকার মো. জহিরুল মুন্সি (৬০) ওরফে জহুরাল এর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জহুরাল এর ফাসির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জহুরাল পাশ্ববর্তী এক বাক-প্রতিবন্ধী শিশুকে বিস্কুট ও নগদ অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে তার চায়ের দোকানের ভিতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে। চিৎকার ও কান্নাকাটি শুনতে পেয়ে এলাকাবাসী ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং ভুক্তভোগী শিশুর মা মোছাঃ হাচিনা বেগম থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
এজাহার সুত্রঃদেবীগঞ্জ থানার মামলা নং- ৩,তাং ১২/১২/২০২৫ ইং। ধারা-৯(১) নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইন-২০০০ রুজু করা হয়। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী মোছাঃ রুকছানা বেগম জানান, “ঘটনাটি জুম্মা নামাজের পর ঘটে। শিশুটি মুদি দোকানে গেলে দোকানদার জহুরাল দোকান বন্ধ করে তাকে দোকানের ভেতর নিজ বাড়ির শয়নকক্ষে নিয়ে যায় এবং সেখানেই ঘটনাটি ঘটায়। পরবর্তীতে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে আমি কয়েকজন স্থানীয় নারী এবং জহুরালের চাচাতো ভাই আব্দুল কাদের জিলানিকে সঙ্গে নিয়ে জহুরালের বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করি। প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর জহুরাল সাড়া দেয়। পরে আমরা সকলে বাড়িতে প্রবেশ করলে শিশুটিকে বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখি এবং জহুরাল দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে শিশুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘটনার বিস্তারিত সবকিছু জানায়।”
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সুবাহান বলেন, “অভিযুক্ত জহুরাল সমাজের একজন প্রবীণ ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে এমন অপকর্মের অভিযোগ অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের একজন কর্মী ছিলেন এবং গত তিন বছর ধরে জামায়াতের হয়ে কাজ করে আসছেন”।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, “অভিযুক্ত জহুরাল কখনোই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতা বা কর্মী ছিলেন না। তবে, জামায়াতের কোন সমর্থক হতে পারেন। কোন সমর্থকের ব্যাক্তিগত অপকর্মের দায় সংগঠন কেন নেবে। অভিযুক্তের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সাংগঠনিক সম্পৃক্ততার দালিলিক প্রমাণ নেই। অভিযুক্ত যেই হোক,উপযুক্ত শাস্তি চাই"।
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় ৬ নম্বর সোনাহার মল্লিকাদহ ইউনিয়নের নুরুর বাজারে স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা এই নৃশংস ও পাশবিক জঘন্যতম ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ফাঁসির দাবি জানান।
এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত জনতা বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এর মধ্যে ছিল— “এই বাংলার ঠিকানায় ধর্ষণকারীদের কোনো ঠাঁই নাই”, “এই বাংলার ঠিকানায় জহুরালের মতো ধর্ষণকারীদের ঠাঁই নাই।”
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে.এম. মনিরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, "ঘটনাটি নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে"।
আমার বার্তা/জেএইচ

