বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলার অনুদানের কঠোর সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি, মাত্র দুইজন কর্মী থাকা একটি নাম না জানা ছোট্ট প্রতিষ্ঠানের হাতে গেছে এই অনুদান।
গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউজে গভর্নরদের ওয়ার্কিং সেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, ওরা ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। একটা চেক! ভাবুন তো, একটা ছোট প্রতিষ্ঠান, যেখানে সামান্য কিছু আয় হচ্ছে—১০ হাজার ডলার, ২০ হাজার ডলার—আর হঠাৎ করেই তারা ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়ে গেলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে।
ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, মাত্র দুইজন কর্মী! আমি নিশ্চিত, তারা এখন খুব খুশি, অনেক ধনী হয়ে গেছে। শিগগির তারা শীর্ষ ব্যবসায়িক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে থাকবে—শ্রেষ্ঠ প্রতারক হিসেবে!
ট্রাম্প তার বক্তব্যে ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ইউএসএআইডির ২১ মিলিয়ন ডলারের তহবিল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, আমরা আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের দেশে কী হবে? আমিও চাই এখানে ভোটার উপস্থিতি বাড়ুক!
ট্রাম্পের এই অভিযোগের সূত্রপাত গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সরকারের নতুন ব্যয় সংকোচন টাস্কফোর্স ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওজিই)-এর এক পোস্ট থেকে। ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই টাস্কফোর্স তাদের ঘোষণায় জানায়, ১১টি বিদেশি প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন ডলার এবং ভারতের ২১ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্পও রয়েছে।
এক্স প্ল্যাটফর্মের ওই পোস্টে বলা হয়, এসব প্রকল্পে মার্কিন করদাতাদের অর্থ ব্যয় করা হতো—যা এখন সম্পূর্ণ বাতিল করা হলো।
বাংলাদেশের জন্য অনুদানটি ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ’ বা রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণ কর্মসূচির আওতায় দেওয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডি এবং যুক্তরাজ্যের ডিএফআইডির যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি সংস্থা।
২০১৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত চলমান এই প্রকল্প রাজনৈতিক দলগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি, দল ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা কমানোর লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। তবে ট্রাম্পের বক্তব্যে প্রকল্পটিকে ‘প্রতারণামূলক’ অনুদান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যদিও এটি মাত্র দুইজন কর্মীর প্রতিষ্ঠান হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আমার বার্তা/এমই