
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে বর্তমানে চরম বেকায়দায় আছে ইউক্রেন। এ যুদ্ধে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি ইউক্রেনকে এই মর্মে শর্ত দিয়েছেন যে হয় মস্কোর সঙ্গে আপস করতে হবে কিয়েভকে, নয়তো ইউক্রেন যদি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়— তাহলে যাবতীয় মার্কিন সহয়াতা বন্ধ হয়ে যাবে।
কিন্তু কী কারণে ইউক্রেনকে এমন কঠিন শর্ত দিয়েছেন, তার ব্যাখ্যা সম্প্রতি দিয়েছেন ট্রাম্প। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বিমান এয়ারফোর্স ওয়ান-এর ফ্লাইটে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেছেন, “ইউক্রেনের কিছু সমস্যা আছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি। কিয়েভ কিছুতেই দুর্নীতি থামাতে পারছে না। ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য প্রধানভাবে দায়ী দুর্নীতি।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনকে গত তিন বছরে হাজার হাজার কোটি ডলারের অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। কিন্তু এই সহায়তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশই লুটপাট করেছেন দেশটির ঊর্ধ্বতন সরকারি ও সেনা কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরের প্রথম দিকে জ্বালানি খাতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় দুজন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁরা হলেন আইনমন্ত্রী হারম্যান হালুশোঙ্কো ও জ্বালানিমন্ত্রী ভিতলানা গ্রিনচুক। তাঁদের বিরুদ্ধে অন্তত ১০ কোটি ডলার ঘুষ নেওয়া চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
দুই মন্ত্রী ছাড়াও নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সাবেক ব্যবসায়িক অংশীদার তিমুর মিনদিচের বিরুদ্ধেও ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন জেলেনস্কি। অভিযোগ উঠেছে, পুরো ঘুষ চক্রের বিষয়টি সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন মিনদিচ।
বিজ্ঞাপন
দুর্নীতি নিয়ে জনরোষের বিষয়টি স্বীকার করে জেলেনস্কি বলেছেন, “জ্বালানি খাতের সব কাজে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা থাকা উচিত। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাদের প্রতিটি তদন্তকে সমর্থন করি।”
এ ঘটনাকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের জন্য বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকট হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি করতে নিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠজনদের কারাগারে পাঠানো ও বরখাস্ত করার মতো কষ্টকর কাজ হলেও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকর্মী, বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তারা জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সূত্র : আরটি
আমার বার্তা/জেএইচ

