
‘নেট জিরো কার্বন এমিশন’ ধারণাকে ধনী দেশগুলোর নতুন অর্থনৈতিক প্রতারণা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, ধনী দেশগুলো আসলে কার্বন নির্গমন কমাতে চায় না বরং ‘নেট জিরো’ ধারণার আড়ালে তারা নতুন প্রযুক্তি ব্যবসা ও করপোরেট মুনাফা বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোজাফফর চৌধুরী অডিটোরিয়ামে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত ‘ক্যাব যুব সংসদ–২০২৫’-এর সপ্তম সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, নেট জিরো আসলে ধনী দেশগুলোর নতুন প্রতারণামূলক প্রস্তাব। এটা নির্গমন কমানোর উদ্যোগ নয়; বরং নতুন প্রযুক্তি বিক্রির ব্যবসা। যেমন দারিদ্র্য সৃষ্টি করে আবার দারিদ্র্য নিরসনের ব্যবসাও তারা করে তেমনি কার্বন নিয়েও তারা ব্যবসা করছে।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, নেট জিরো মানে একদিকে কার্বন ছাড়া, অন্যদিকে কার্বন কমানোর প্রযুক্তি বিক্রি করা। এর মধ্য দিয়ে তারা এক ধরনের ‘টেকনোলজিক্যাল ব্যবসা’ চালিয়ে যাচ্ছে। ধনী দেশগুলো পরিবেশ নয়, নিজেদের অর্থনৈতিক প্রভাব টিকিয়ে রাখতেই এ ধারণা প্রচার করছে।
দেশের বাস্তব পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী নই বরং ভুক্তভোগী। তবুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও নানা শর্ত মানতে হয়। ধনী দেশগুলো দায়িত্ব নিতে চায় না বরং নানাভাবে দায় এড়িয়ে চলে।
অর্থনৈতিক বৈষম্যের প্রসঙ্গে ফরিদা আখতার বলেন, দেশের খামারি ও মৎস্যচাষিদের বিদ্যুৎ বিলেও বৈষম্য রয়েছে। কৃষকেরা যে রেটে বিদ্যুৎ পায়, খামারিরা তা পায় না। তাদের শিল্প বা বাণিজ্যিক রেটে বিল দিতে হয় যা অন্যায়।
তিনি আরও বলেন, এই বৈষম্য দূর করতে সরকার কাজ করছে। আমরা চাই মৎস্য চাষিরাও কৃষকের মতো ভর্তুকিপ্রাপ্ত রেটে বিদ্যুৎ পাক। এতে বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে, তবুও এটা করলে ছোট খামারিরা টিকে থাকবে।
বিদ্যুতের অপচয় ও নগর-গ্রামের বৈষম্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঢাকায় অকারণে যত বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়, ততটাই ঘাটতি থাকে গ্রামের মানুষের ঘরে। রাঙামাটির মতো এলাকায় দিনে পাঁচ-ছয়বার লোডশেডিং হয়, অথচ পাশের পাওয়ার স্টেশন থেকেই শত শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। অন্তত বিদ্যুৎ খাতে ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন– বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ডাকসুর জিএস ও ঢাবি শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ এবং ‘ক্যাব যুব সংসদ’-এর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ অন্যান্যরা।
আমার বার্তা/এমই

