সাভার উপজেলার আশুলিয়া ধামসোনা ইউনিয়ন এর নলাম এলাকায় ৫টি ভেকু দিয়ে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এতে হারিয়ে যাচ্ছে শত শত বিঘা কৃষিজমি, পরিণত হচ্ছে জলাশয়ে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে মাটি কেটে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে মানচিত্র থেকে উধাও করে দিচ্ছে কৃষিজমি। যদিও কৃষিজমি রক্ষায় সরকারের কড়া নির্দেশ রয়েছে। সম্প্রতি সরেজমিনে আশুলিয়ার নলাম এলাকার বংশী নদীর পাড়ে চতুর্দিক ৫টি ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে এমন চিত্র চোখে পড়ে। এতে ফসলি জমির মাটি গুলো ড্রাম ট্রাকের করে পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়।
এছাড়া রাতে ২০টি মাহিন্দ্র ট্রাক্টর করে মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাটি কাটাচ্ছে কয়েকটি চক্র। ভেকু দিয়ে মাটির ব্যবসা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। ফসলি জমিতে ভেকু দিয়ে অর্থের বিনিময়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন মাটিখেকোরা। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপের অভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন সাভার উপজেলার ধামসোনা ইউনিয়ন এর নলাম এলাকার মাটিখেকোরা।
স্থানীয়রা বলছেন, ফসলি জমি ধ্বংসের জন্য শুধু মাটি ব্যবসায়ীরাই দায়ী নয়, জমির মালিকরাও দায়ী। কারণ মাটিখেকোদের নগদ টাকার লোভে পড়ে থাকেন জমির মালিকরা। এই সুযোগে কৌশলে জমির মালিকদের নগদ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমির মাটি কিনে নেন মাটি ব্যবসায়ীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ধামসোনা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের আবদুর রহিম,রফিকুল ইসলাম মন্টু,শাহীন,মনির হোসেন,হাফিজুর রহমান,মো: মাসুমসহ আরও অনেকই মিলে মাটি ব্যবসায়ী ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে অবাধে ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফসলি জমির মাটি কাটার কথা স্বীকার করেন তারা।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল কালাম জানান, নলাম এলাকায় এি ফসলি জাগায় আমরা বছর ফসল ফলাতাম। কিন্তু এ বছর ধার ঘেষে মানুষ নিচু করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। এ বিষয়ে প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও কোনই লাভ হয়নি। দিনের পর দিন মাটি কেটেই যাচ্ছে। এতে আগামী বছর এসব ফসল ফলানোর জায়গা আর থাকবে না। সব পানিতে ধুয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বাসীন্দা জানান জুলাই আগস্টের বিপ্লবের পর বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় মাটিখেকো আব্দুর রহিম তার সহযোগী সাবেক ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম মন্টুকে সাথে রাখে কোন ঝামেলা হইলে তারা এগুলা সমাধান করে।
এবিষয়ে কিভাবে মাটি উত্তেলন করছেন জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম মন্টু কোন উত্তর না দিয়ে বার বার দেখা করার প্রস্তাব দেন। অপরদিকে আব্দুর রহিম এর সাথে মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন জমির মালিকের সাথে কথা বলেই মাটি কাটছি,ইটভাটার সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে।আপনি মন্টুর সাথে দেখা করেন।
এদিকে নদীর বাঁধ রক্ষাসহ বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে এলাকাবাসীকে বাঁচাতে দ্রুত বংশী নদীর মাটি বেচাকেনার অবৈধ ব্যবসা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।