শীতের শুরুতে ঋতু পরিবর্তন হওয়ায় ব্রাহ্মণপাড়ায় ঘরে ঘরে বেড়েছে জ্বর সর্দি কাশি সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু বয়স্করা। এদিকে হাসপাতল ও চিকিৎসালয়ে শিশু বয়স্কদের ভিড় বাড়ছে।
ঋতুর পরিবর্তন হওয়ায় হেমন্তের প্রথম দিকে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা দুই থেকে তিনগুণ বৃদ্ধির তথ্য দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ব্রাহ্মণপাড়া বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি বাইরের ইউনিয়ন থেকে অনেক অসুস্থতা নিয়ে রোগী আসছে। হাসপাতালগুলো ঘুরেও দেখা গেছে রোগীদের ভিড়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানান, ঋতু পরিবর্তনজনিত কারণে মৌসুমি জ্বরসহ এ সময় শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া, ব্রংকিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, টনসিলাইটিস, অ্যাজমা,ডায়রিয়া, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেকে সাধারণ সর্দি-কাঁশি, ঠান্ডা-জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত কয়েকদিনে সরকারি হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এরকম সময়ে শিশু ও বৃদ্ধদের সুস্থ রাখার জন্য ধুলোবালি ও ঠান্ডা ও প্রচন্ড গরম পরিবেশ থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারেও রোগী বাড়তে দেখা গেছে।
গতকাল ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে রোগীদের প্রচন্ড ভিড়। সরকারি হাসপাতাল এর সামনে এক শিশুকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আমেনা আক্তার নামে এক নারী। তিন বছরের শিশু সিয়ামকে নিয়ে প্রচন্ড জ্বর ও কাশি জনিত আসুখ নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন ফাতিমা বিবি। তিনি আরো বলেন গত কয়েকদিন যাবত তার বাচ্চা প্রচুর সর্দি ও কাশিঁ গ্রামের ওষুধের দোকান থেকে এন্টিবায়োটিক সহ বিভিন্ন ওষুধ খাওয়াইছি কিন্তু আমার বাচ্চার সর্দি ভালো হচ্ছে না। তাই আমি বড় ডাক্তার দেখানোর জন্য চান্দনা থেকে ব্রাহ্মণপাড়া হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। সিদলাই থেকে কবির নামে তিন বছর বয়সের নাতি নিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এসেছেন আলফু মিয়া তিনি জানান, প্রথমেই সিদলাই বাজারে গ্রাম ডাক্তার দেখিয়েছি অনেক পরিক্ষা- নিরিক্ষার মাধ্যমে ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। কিছুদিন ভালছিল বর্তমানে নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
সাহেবাবাদ থেকে ১৯ মাস বয়সী জান্নাতকে নিয়ে সরকারি হাসপাতালে এসেছেন তার মা আয়েশা খাতুন।আয়েশা বলেন, “সাত-আটদিন ধরে ঠাণ্ডা, কাশি। কিছুতেই কমতেছে না। এজন্য এই হাসপাতালে নিয়া আসছি।”
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন 'কুমিল্লার কাগজ'কে বলেন, শীতের শুরুতে ঋতু পরিবর্তনের পর ঘরে ঘরে জ্বর ও নিউমোনিয়া ও বায়ুদূষণজনিত কারণে রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেড়েছে। তাদের অনেকে আসছে সর্দি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, হাঁচি-কাশি নিয়ে। একটা অংশের তীব্র জ্বর, গলাব্যথা, কাশির উপসর্গ রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, “দেখা গেছে এই ধরনের রোগীদের কোনো সংক্রমণ নাই, জ্বরও নাই। কিন্তু নাক বন্ধ থাকায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, নবজাতক হলে দুধ টেনে খেতে পারে না। বাচ্চা ঘুমাতে পারে না, কান্নাকাটি করে। বাচ্চারা শ্বাসতন্ত্রের নানা ধরনের সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এই সময় বাচ্চাদের অ্যাজমাও বেড়ে যাচ্ছে। তাই শীতের শুরুতে সকলকে সর্তক থাকতে হবে।