
ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির অনৈক্যের নেপথ্যে ফ্যাসিস্ট রেজিম ও বিদেশি শক্তির ইন্ধন থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মায়ের ডাক-এর প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সানজিদা ইসলাম তুলি। তিনি বলেছেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে তথাকথিত লকডাউন, বিভিন্ন স্থানে আগুন দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টার উদ্দেশ্য মানুষ বুঝতে পারছে। এসব অপকর্ম সফল হবে না।
রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত 'ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হলেই গণতন্ত্র টেকসই হবে' শীর্ষক ছায়া সংসদে এ কথা বলে তিনি।
সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অনৈক্য ও চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজন সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা। বিবদমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এমন ব্যবস্থা চাই, যাতে ভিন্নমতের কেউ প্রতিহিংসার শিকার না হয়। আমরা ভিন্নমতের বা ভিন্ন দলের হতে পারি, কিন্তু ন্যায়বিচার ও অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য এক। হাসিনার আমলে নির্যাতন ও ভয়ভীতির মধ্যেও আমরা টিকে ছিলাম, ভবিষ্যতেও প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাদের পাশে থাকব।
অনুষ্ঠানে একই আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম (আরমান) বলেন, বিএনপি-জামায়াতের এখন যে তর্ক চলছে, তাতে কোনো দলই পারফেক্ট নয়। এই বিতর্কের মাধ্যমেই জনগণের রায়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবে। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য বাধাগ্রস্ত হবে না। ফ্যাসিবাদ আমলে কেবল আমিই নই, পুরো জাতিই আয়না ঘরে বন্দি ছিল। দল ও প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, তবে দ্বন্দ্ব থাকবে না। প্রতিযোগিতা হবে জনগণকে সেবার মাধ্যমে সুস্থ রাজনীতি উপহার দেওয়ার। আমরা ফ্যাসিবাদের কালো চেহারা দেখেছি। তরুণরাই ফ্যসিবাদকে লাল কার্ড দেখিয়ে আমাদের মুক্ত করেছে। ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চাই না। এজন্য রাজনীতিবিদসহ সবাইকে সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নির্বাচন ঘিরে যে ধোঁয়াশা ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছিল, প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের পর তা কেটে গেছে। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত সব রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য উইন-উইন সিচুয়েশন তৈরি করেছে। দেশ এখন নির্বাচনের পথে। তবে এবারের নির্বাচন হবে বাঘে বাঘে লড়াই। জনগণের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করা না গেলে অতীতের মতো রেডিমেড এমপি-মন্ত্রী হওয়ার আশা দূর আশায় পরিণত হবে। বর্তমানে বিএনপি-জামায়াতের যে মতভেদ চলছে তা যাতে সংঘাতের পথে না যায়। তবে দেশে অভিশপ্ত লগি-বৈঠা তাণ্ডব কিংবা ১/১১ এর মতো পরিস্থিতি হওয়ারও আশঙ্কা নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর সবচেয়ে বড়ো সৌন্দর্য হচ্ছে নিজেদের মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও ফ্যাসিবাদ ইস্যুতে সবাই ঐক্যবদ্ধ।
ছায়া সংসদে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরাজিত করে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মাইদুর রহমান রুবেল, সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন ও সাংবাদিক আহমেদ সরওয়ার। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
আমার বার্তা/এমই

