রংপুরে গত দু’দিনের বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে সোমবার রাতের বৃষ্টিতে ভোগান্তি বেড়েছে। নগরীর ভরা ড্রেনের ময়লা পানি বের হয়ে রাস্তায় জমে থাকা পানির সঙ্গে মিলে দুর্গন্ধের সৃষ্টি করছে। ফলে দুর্ভোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে নগরবাসী।
রংপুর সিটি করপোরেশন থেকে নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করা ও শ্যামাসুন্দরীর খাল সংস্কারের কাজে পদক্ষেপ না নেওয়ায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ নগরবাসীর।
সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, পাড়া মহল্লার রাস্তায় জমে আছে পানি। অনেকের উঠানে পানি জমে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ড্রেনগুলো ভর্তি হওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন দূরের কথা, উল্টো ড্রেন থেকে বেরিয়ে আসছে ময়লা আবর্জনা। ফলে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে ক্ষোভ বিরাজ করছে নগরবাসীর মাঝে। তবে মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার বৃষ্টি কম হওয়ায় অনেক জায়গায় পানি নেমে গেলেও পুরোপুরি ভোগান্তি কাটেনি।
নগরীর নিউ জুম্মাপাড়া এলাকার আতিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুম আসার আগেই যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়বে। পানি নিষ্কাশনের ড্রেন ভর্তি হয়ে গেছে। সিটি করপোরেশন থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
বাবুখাঁ এলাকার হাফিজুর রহমান বলেন, ড্রেন পরিষ্কারের উদ্যোগ সিটি করপোরেশন থেকে নেওয়ার কথা। ৫ আগস্টের পর মেয়র-কাউন্সিলর না থাকায় গুরুত্ব কমে গেছে। নিচু এলাকাগুলোর অনেক জায়গায় এখনো পানি জমে আছে।
এদিকে রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা) রংপুরে ২২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যার মধ্যে শেষ ২৪ ঘণ্টায় হয়েছে ৮৮ মিলিমিটার এবং আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৪১ মিলিমিটার। এই বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর জেলায়। এছাড়াও আগামী শুক্রবার পর্যন্ত রংপুর বিভাগে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ইনচার্জ নূর আলম বলেন, ছোট ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে। নগরীতে জলাবদ্ধতা রোধে শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কার জরুরি। ছোট ড্রেন পরিষ্কার করে জলাবদ্ধতা রোধ করা সম্ভব নয়। এছাড়া বড় ড্রেন পরিষ্কারের টেন্ডার আগামী ২৬ মে ওপেন করা হবে। এরপর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বড় ড্রেন পরিষ্কারের কাজ শুরু হবে।
রংপুর আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, রংপুর বিভাগের ৮ জেলার কিছু কিছু জায়গায় বজ্রসহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত এমন আবহাওয়া বিরাজ করবে। এসময় রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।
আমার বার্তা/এল/এমই