চা দিবস অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে ২১ মে পালিত হচ্ছে। তবে দেশের নতুন প্রেক্ষাপটে এবারের চা দিবস জাকজমক ভাবেই রেখেই পালিত হয়েছে।
বাংলাদেশি চায়ের অতীত ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে চায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে কেসস্টাডির মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে চা রপ্তানি বাড়াতে কাজ করছে সরকার। তিনি চা শিল্পকে শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক বাজারেও সমানভাবে তুলে ধরতে কাজ করার আহবান জানান।
বুধবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পঞ্চম জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন , আমরা শ্রমিকদের কাছ থেকে শুনতে পাচ্ছি চা এর উপযুক্ত মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে বসেই ছোট্ট একটা হিসাব করে দেখলাম যদি নয় কোটি ত্রিশ লাখ কেজি চা উৎপন্ন হয়, বাজারের যে মূল্যমানে বিক্রি হয় তাতে খসড়াভাবে তিন হাজার সাতশ’ থেকে চার হাজার কোটি টাকার চা বাজারে বিক্রি হয়। একই সময়ে যদি স্ট্রিট ভ্যালুতে কনভার্ট করি তাহলে মিনিমাম ডাবল থেকে ত্রিপল একটি মূল্যমান দাড়াবে। অর্থাৎ ভোক্তা পর্যায়ে আট থেকে দশ হাজার কোটি টাকার ব্যয় হয়।
শেখ বশির বলেন, আমরা যদি এটার একটা সুষম বন্টন করতে পারি তাহলে চা শিল্পের যে দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে যাচ্ছি সেখান থেকে জাতীয় সম্পদ চা’কে রক্ষার উপায় খুঁজে বের করতে পারবো। চা শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনাকে আমাদের কাজে লাগাতে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। চা শিল্পে বিভিন্ন রকম শুল্ক ও কর অব্যবস্থাপনা আছে আমরা সেটিকে বন্ধ করতে চাই। এই শিল্পে শৃঙ্খলা আনতে চাই। যাতে এর মাধ্যমে বাজারে পণ্যমূল্যে স্থিতিশীলতা আসে এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি আরো বলেন, চা শিল্পের জন্য যে পরিমাণ জমি আছে তার একটা উপযুক্ত ব্যবহার দরকার। এর অন্যান্য ব্যবহার সেটা নবায়ন যোগ্য জ্বালানি হোক অথবা পর্যটন কেন্দ্র হোক সেদিকে মনযোগ বাড়াতে হবে। তবে মূল লক্ষ্য হচ্ছে চা থেকেই চায়ের বাগানের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। চা শ্রমিক, মালিক সকলের সম্মিলিত চেষ্টা দরকার। চায়ের উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে বিক্রি মূল্য বাড়াতে হবে। বিক্রি বাড়াতে হলে চা পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ ও আকর্ষণীয় করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সভাপতি শাহ মইনুদ্দিন হাসান, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান, জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪ বিজয়ী চা শ্রমিক জেসমিন আক্তার এবং চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নৃপেন পাল।
অনুষ্ঠানে দেশের চা শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আট ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৫ প্রদান করা হয়। এছাড়াও জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে এবছর সর্বোচ্চ চা উৎপাদনকারী কারখানা ক্যাটাগরিতে দু’টি বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির হাতে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন। এরআগে বেলুন উড়িয়ে পঞ্চম জাতীয় চা দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন । পরে তিনি চা মেলায় চায়ের বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
আমার বার্তা/এল/এমই