নিয়োগের দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আবেদন বঞ্চিতরা।
বুধবার (২১ মে) বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা।
তারা বলছেন, বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত মোট ১৭টি নিবন্ধন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এনটিআরসিএ এক বছরের পরীক্ষা ৪ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত করার ফলে ১৭তম নিবন্ধনে ৭৩৯ জন ৩৫ ঊর্ধ্বে হওয়ায় পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারেননি। তারা বলছেন আইনগত জটিলতা কেটে যাওয়ার পরও নিয়োগ দিতে এতো গড়িমসি কেনো।
জানা যায়, ১৭তম ব্যাচের পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে করোনা মহামারি ও এনটিআরসিএ দাপ্তরিক কারণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে চূড়ান্ত ফলাফল পর্যন্ত মোট ৪ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হয়ে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর। এমতাবস্থায় ১৭তম নিবন্ধনধারীদের নিয়োগের নিমিত্তে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে তাদের বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে ওই সময়ক্ষেপণের (যা ৭৩৯ জন আওতার বাইরে ছিল) বিষয়টি বিবেচনায় গ্রহণ করা হয়নি। অথচ সনদের মেয়াদ তিন বছর থাকা সত্ত্বেও একবারও আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এ ছাড়া এনটিআরসিএ করোনার প্রকৃত ভুক্তভোগী বিষয়টি বিবেচনা করে ১৭তম আবেদনবঞ্চিতরা গত বছরের ১৪ মার্চ ও ৭ আগস্ট বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য এনটিআরসিএ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবার আইনি জটিলতা সাপেক্ষে শিক্ষা উপদেষ্টার সম্মতিক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ে ভোটিং এর জন্য পাঠায়। পরবর্তী সময়ে আইন ও বিচার বিভাগের মতামত অনুবিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবার নীতিগত সিদ্ধান্তের আলোকে গত ২৭ মার্চ এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ থেকে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে রূপরেখা চায়। কিন্তু আইনি মতামতে উল্লেখ আছে যে, আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী, সনদের মেয়াদ ৩ বছর থাকা সাপেক্ষে এবং করোনা মহামারির মতো পারিপার্শ্বিক বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ১৭ ব্যাচের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কোনো তারিখে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ নির্ধারিত হবে, সে বিষয়ে যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
এ বিষয়ে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের সমন্বয়কারী জমির উদ্দীন বলেন, আইনি মতামত থাকা সাপেক্ষেও এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান করোনার প্রকৃত ভুক্তভোগী ১৭তম নিবন্ধনধারীদের নিয়োগের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে না, বরং বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদের যুক্তিসংগত বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ তাদের কোনো মামলা পেন্ডিংনেই বিধায় বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা।
১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের একজন সমন্বয়কারী ইউছুফ ইমন বলেন, এনটিআরসিএর সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ হিল আজিম দুবার করোনাকালীন বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে প্রস্তাবনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এমনকি প্রস্তাবনার আলোকে আইন, বিচার সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৫ আমাদের পক্ষে মতামত প্রদান করে। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান তা বাস্তবায়ন করতে চাই না। মূলত ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের সার্টিফিকেট ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে পাওয়ার পরেও একটিবারের জন্য আবেদন এনটিআরসিএ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবার আইনি জটিলতা সাপেক্ষে শিক্ষা উপদেষ্টার সম্মতিক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ে ভোটিং এর জন্য পাঠায়। পরবর্তী সময়ে আইন ও বিচার বিভাগের মতামত অনুবিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবার নীতিগত সিদ্ধান্তের আলোকে গত ২৭ মার্চ এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ থেকে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে রূপরেখা চায়। কিন্তু আইনি মতামতে উল্লেখ আছে যে, আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী, সনদের মেয়াদ ৩ বছর থাকা সাপেক্ষে এবং করোনা মহামারির মতো পারিপার্শ্বিক বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ১৭ ব্যাচের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কোনো তারিখে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ নির্ধারিত হবে, সে বিষয়ে যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
এনটিআরসিএ গত বছরের গত ৩১ মার্চ প্রকাশিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৬ হাজার ৭৩৬টি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের পঞ্চম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ২৪ হাজারেরও কম প্রার্থী আবেদন করে। এতে এনটিআরসিএ প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করেছে ২২ হাজারের কিছু বেশি প্রার্থীকে। আর বঞ্চিত হয়েছেন ৭৩৯ শিক্ষক নিবন্ধনধারী। এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় প্রার্থীর বয়স নির্ধারণ করা হয় ৩৫ এবং সনদের মেয়াদ ৩ বছর। কিন্তু এনটিআরসিএ প্রত্যাক বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের বয়সসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো তারিখে সর্বোচ্চ বয়স গণ্য করা হবে, তা যুক্তিসংগত বিবেচনার ওপর নির্ভরশীল হয়েছে এবং বয়সের ছাড় দিয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই